এবারের ঈদ উল আজহায় ঘুরে আসুন সিলেটের অপার সৌন্দর্য ঘেরা সেরা পর্যটন স্থানসমূহ

বারের ঈদ উল আজহায় ঘুরে আসুন সিলেটের অপরূপ সৌন্দর্য ঘেরা সেরা পর্যটন স্থানসমূহ


ঈদ উপলক্ষে সিলেট ভ্রমণ ➤ পরিবার নিয়ে সিলেটের পর্যটন স্থান ঘুরে আসার আনন্দময় ভ্রমণের প্রস্তুতি এবং পরিবার নিয়ে ভ্রমণের ইনফোগ্রাফি চিত্র


ঈদে ভ্রমণের পরিকল্পনা! ঈদ উপলক্ষে সিলেট ভ্রমণ! পরিবার নিয়ে সিলেটের পর্যটন স্থান ঘুরে আসার আনন্দময় ভ্রমণের প্রস্তুতি এবং পরিবার নিয়ে ভ্রমণের গাইড


সিলেট বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা একটি অপার বিস্ময়কর একটি শহর ✔
যা ঈদে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য হয়ে ওঠে স্বর্গ ✔

এবারের ঈদ উল আজহার ছুটিতে যদি আপনি পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে কোথাও ঘুরতে যেতে চান। তবে সিলেটের অসাধারণ পর্যটন স্থানগুলো হতে পারে আপনাদের জন্য সেরা একটি গন্তব্য।

এই ব্লগে আমরা আপনাকে জানাবো ঈদে সিলেট ভ্রমণ সম্পর্কে এবং সিলেটের দর্শনীয় স্থান, ঈদের ছুটিতে ঘোরার জায়গা, সিলেট ট্যুরিস্ট স্পট এবং ঈদ ২০২৫ সিলেট গাইড এবং ভ্রমণপিপাসুদের কাছে সহজে পৌঁছাতে পারবে। এছাড়া, এই গাইডলাইনে উল্লেখ রয়েছে জনপ্রিয় ট্র্যাভেলস এর সাইট যেমন: Shohoz (বাস ও ট্রেন টিকিট বুকিং) Agoda (হোটেল বুকিং) এবং Busbd (বাস সার্ভিস) এই ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই ভ্রমণের প্রস্তুতি নিতে পারবেন।

সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১২টি ভ্রমণ স্থান নিয়ে এই ব্লগ ✔ যা আপনার ঈদকে আরো আনন্দময় ও স্মরণীয় করে তুলবে ✔ এখনই ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন এবং প্রকৃতির ছোঁয়ায় ঈদকে করে তুলুন আনন্দময় ✔

আরো পড়ুন ➤


ভ্রমণের সেরা সময়! কেন এবারের ঈদে সিলেট?

ঈদের ছুটি মানেই
পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো ✔
আর এর সেরা উপায় হতে পারে কোনো প্রাকৃতিক ও নিরিবিলি পরিবেশে ঘুরে আসা। সিলেট এমনই একটি জায়গা > যেখানে রয়েছে পর্যটনের সব কিছুই।
যেমনঃ পাহাড়, ঝর্ণা, চা বাগান, নদী আর মেঘে ঢাকা সৌন্দর্য।

এই ঈদে অর্থাৎ জুন জুলাই মাসে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে সিলেটের প্রাকৃতিক দৃশ্য থাকে একেবারে প্রাণবন্ত সৌন্দর্য ঘেরা। বর্ষায় ঝর্ণাগুলোর গর্জন, সবুজে ঘেরা পাহাড় আর মেঘে মিশে থাকা আকাশ।
সব মিলিয়ে সিলেট হলো ঈদের ছুটির জন্য আদর্শ ভ্রমণ স্পট ✔

সিলেট পৌঁছানোর উপায়

বাস: ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে নিয়মিত এসি / নন এসি বাস চলে Shohoz.com এবং Busbd.com থেকে অনলাইন টিকিট বুকিং করা যায়।
ট্রেন: সিলেটগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় Railway.gov.bd এই সাইটে।
ফ্লাইট: ইউএস বাংলা, নভোএয়ার এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পাওয়া যায়।

একটি তিনটি উপায়ে আপনি দেশের যে কোন স্থান থেকে সিলেটে পৌঁছাতে পারেন।

এবারের ঈদে ঘুরে আসার মতো সিলেটের সেরা ১২টি পর্যটন স্থানসমূহ

জাফলং

ঈদ উল আজহার ছুটিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা স্থান খুঁজছেন? তাহলে জাফলং হতে পারে আপনার আদর্শ গন্তব্য ✔

সিলেটের এই সীমান্তবর্তী অঞ্চলটি তার স্বচ্ছ পানির নদী, খাসিয়াপুঞ্জি পাহাড়, পাথরের দৃশ্য এবং সবুজ প্রকৃতির জন্য বিখ্যাত। ঈদের সময় আবহাওয়া সাধারণত মনোরম থাকে, যা ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।

জাফলং এ নদীর পানিতে নৌকা ভ্রমণ, ঝর্ণার ধারা দেখা এবং পাহাড়ের কোল ঘেঁষে হাঁটার অভিজ্ঞতা আপনাকে এক অন্যরকম প্রশান্তি এনে দেবে। ঈদের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে এমন একটি জায়গায় সময় কাটানো মানে নিখুতঁ আনন্দ। শহরের কোলাহল থেকে দূরে, শান্ত প্রকৃতির মাঝে কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে নেওয়া হতে পারে ঈদের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত ✔
সিলেট শহর থেকে মাত্র ৬০ কিমি দূরে অবস্থিত জাফলং এ যাওয়া যায় বাস, সিএনজি বা মাইক্রোবাসে। থাকার জন্য কাছাকাছি হোটেলেও থাকা যায় সহজে। তবে ঈদের সময় ভিড় বেড়ে যায়, তাই অগ্রিম পরিকল্পনা করাই সবচেয়ে ভালো হবে।

এই ঈদে জাফলং এ ভ্রমণ আপনাকে দিতে পারে এক অসাধারণ স্মৃতিময় মুহূর্ত ✔

সাদা পাথর

পাহাড়, নদী ও স্বচ্ছ জলের স্বর্গীয় মিলনস্থল


সিলেটের সীমান্তবর্তী একটি অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নাম ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর ✔

ঈদ উল আজহার ছুটিতে পরিবার কিংবা বন্ধুদের নিয়ে স্বল্প দূরত্বে এক অনন্য গন্তব্য খুঁজছেন? তাহলে ভোলাগঞ্জ হতে পারে আপনার জন্য পারফেক্ট ভ্রমণ স্পট। এটি সিলেট শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে, যা বাস, সিএনজি বা ব্যক্তিগত গাড়িতে প্রায় ১.৫ / ২ ঘণ্টায় পৌঁছানো সেখানে যায়।

সাদা পাথরের আস্তরণ, স্বচ্ছ নীল পানি, মেঘালয়ের পাহাড়ি জলধারা আর শান্ত প্রকৃতি মিলে এই পর্যটন স্থানটি যেন এক জীবন্ত পেইন্টিং আঁকার মতো। বর্ষার পরে ঈদের সময় এখানে পানি থাকে স্বচ্ছ ও প্রাণবন্ত, যা নৌকাভ্রমণ ও ছবি তোলার জন্য আদর্শ ও সুন্দর মনোরম একটি জায়গা।
ডাউকি নদী থেকে নামা স্বচ্ছ জলের প্রবাহ ও সাদা পাথরে ঘেরা এলাকাটি এখন বাংলাদেশিদের কাছে একটি মোস্ট জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট। এখানে পর্যটকদের জন্য রয়েছে ভাড়ায় চালিত নৌকা, ছোট খাবারের দোকান ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা।

ঈদের ছুটিতে প্রকৃতির সঙ্গে কাটাতে চাইলে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর একদিনের ভ্রমণের জন্য অসাধারণ একটি স্থান ✔ যেখানে পাহাড়, পানি ও পাথর মিলে সৃষ্টি করে এক প্রাকৃতিক মুহূর্তের অভিজ্ঞতা ✔

বিছানাকান্দি

প্রকৃতির কোলে এক দিনের স্বর্গীয় ভ্রমণ


ঈদ উল আজহার ছুটিতে সিলেটের বিছনাকান্দি হতে পারে প্রকৃতি প্রেমীদের আদর্শ গন্তব্য ✔

সিলেট শহর থেকে বিছনাকান্দির দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার, যা অল্প সময়েই যাওয়া যায়। প্রথমে সিলেট থেকে হাদারপাড় পর্যন্ত বাস, সিএনজি বা মাইক্রোবাসে যেতে হবে। এরপর হাদারপাড় থেকে নৌকায় করে বিছনাকান্দি পৌঁছাতে হয়, যা নিজেই একটি রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।

বিছনাকান্দির প্রকৃতি ঈদের সময় বিশেষভাবে মনোরম থাকে। পাহাড়ি ঝর্ণা, স্বচ্ছ পানির নদী, সাদা পাথরের স্তূপ আর মেঘে ঢাকা আকাশ একত্রে তৈরি করে এক স্বপ্নময় পরিবেশ।

ঈদের ছুটিতে পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে বিছনাকান্দি অসাধারণ এক জায়গা।
তবে ঈদের সময় ভিড় বেশি হয়, তাই আগেই পরিকল্পনা করে যান এবং স্থানীয় গাইড নিয়ে নিলে ভ্রমণ আরও সহজ ও উপভোগ্য হয়। সব মিলিয়ে ঈদের উৎসবকে রাঙিয়ে তুলতে বিছনাকান্দি নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার ভ্রমণস্থান।

পাথর, ঝর্ণা, সবুজ পাহাড় আর নদীর অপূর্ব মিলনস্থল ✔ বিছানাকান্দি সিলেটের আরেকটি সৌন্দর্যময় স্থান। এখানে ছোট ছোট নৌকায় ঘুরে দেখতে পারবেন পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণা আর নদীর জলরাশি ✔

লালাখাল

নীল ও সবুজ জলের শান্তিময় প্রাকৃতিক স্বর্গীয়


সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত লালাখাল > ঈদ উল আজহার ছুটিতে প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এক অসাধারণ সুন্দর ভ্রমণস্থান ✔

সিলেট শহর থেকে লালাখালের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। শহর থেকে সরাসরি বাস, মাইক্রোবাস কিংবা প্রাইভেট কারে তামাবিল রোড ধরে সারিঘাট পর্যন্ত যেতে হয়, তারপর সারিঘাট থেকে নৌকায় করে লালাখালে পৌঁছাতে হয়।

লালাখাল মূলত শীতল, স্বচ্ছ ও নীলাভ সবুজ রঙের পানির জন্য বিখ্যাত। নদীর গভীরতা কম হওয়ায় পানি এতটাই স্বচ্ছ থাকে যে নিচের বালু পর্যন্ত দেখা যায়। ঈদের সময় এখানে নৌকায় ঘুরে বেড়ানো, নদীর ধারে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা এবং পাহাড় ঘেরা পরিবেশে ছবি তোলার আনন্দই আলাদা।

পর্যটকদের জন্য রয়েছে ভাড়া নেওয়ার মতো কাঠের নৌকা ও ছোট ছোট খাবারের দোকান। তবে ঈদের সময় অনেক পর্যটক ভিড় করেন, তাই আগেভাগে গিয়ে সময় কাটানোই উত্তম। ঈদের ছুটিতে যারা প্রকৃতি ও শান্ত পরিবেশের খোঁজ করেন, লালাখাল হতে পারে তাদের জন্য নিখুঁত একটি গন্তব্য।
স্বচ্ছ নীলচে পানি ও চা বাগানে ঘেরা এলাকা লালাখাল। ছোট ছোট নৌকায় নদীতে ঘুরে বেড়ানো এখানে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা।

ঈদের দিনে পরিবারসহ ঘুরতে চাইলে লালাখাল হতে পারে একটি আদর্শ ভ্রমণ স্থান।

রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট

বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন ঘেরা ঈদের অভিজ্ঞতা


ঈদ উল আজহার ছুটিতে প্রকৃতির এক ব্যতিক্রমী রূপ উপভোগ করতে চাইলে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট হতে পারে অসাধারণ একটি গন্তব্য ✔

এটি বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন (Swamp Forest) যা সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট এর দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। সিলেট শহর থেকে প্রথমে যেতে হবে গোয়াইনঘাটের শ্রীপুর বা মিত্রগঞ্জ ঘাটে, এরপর নৌকায় করে রাতারগুল পৌঁছানো যায়। বর্ষাকালে বনটি পানিতে তলিয়ে যায়, আর গাছগুলো পানির ওপর থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে! যেই দৃশ্য দেখতে অবিশ্বাস্য সুন্দর লাগে।

ঈদের সময় এই বন এক অনন্য রূপ ধারণ করে, কারণ তখন জলমগ্ন অবস্থায় নৌকা দিয়ে বনভ্রমণ হয় এবং প্রকৃতির নিঃশব্দতায় এক আলাদা প্রশান্তি পাওয়া যায়। নৌকা ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা সহজ, তবে ঈদের সময়ে বেশি ভিড় হয় বলে আগেই পৌঁছানো ভালো।

রাতারগুলে ঘোরার সময় ক্যামেরা সঙ্গে রাখা উচিত, কারণ প্রতিটি মুহূর্তই যেন একটি ছবির মতো। এই ঈদে একদিনের অসাধারণ ভ্রমণের জন্য রাতারগুল নিঃসন্দেহে একটি আদর্শ স্থান।

বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন, যা বর্ষাকালে পানিতে তলিয়ে যায়। ঈদের ছুটিতে বোটে করে রাতারগুল ভ্রমণ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হতে পারে।

হাম হাম জলপ্রপাত

ট্রেকিং আর প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরা এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা


সিলেট ট্রেকিং স্পট > প্রকৃতিপ্রেমী ও অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়দের জন্য ঈদ উল আজহার ছুটিতে কমলগঞ্জের হাম হাম ঝর্ণা ভ্রমণ হতে পারে এক দুর্দান্ত গন্তব্য ✔

এই হাম হাম ঝর্ণা মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টে অবস্থিত।
যা সিলেট শহর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে।
সিলেট শহর থেকে প্রথমে যেতে হয় শ্রীমঙ্গল বা কমলগঞ্জ পর্যন্ত। সেখান থেকে স্থানীয় গাড়িতে বা মোটরবাইকে কাঁঠালছড়া গ্রাম পর্যন্ত যেতে হয়। এরপর শুরু হয় প্রায় ৩ ঘণ্টার ট্রেকিং পথ!
জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পায়ে হেঁটে পাহাড়ি পথ পেরিয়ে পৌঁছাতে হয় হাম হাম ঝর্ণায়।
এই যাত্রাপথই ভ্রমণের মূল আকর্ষণ ✔

ঝর্ণায় পৌঁছানোর পর পাহাড় বেয়ে নামা ঝর্ণার স্রোত, পাহাড়ি পাখির ডাক এবং বনভূমির নির্জনতা সব মিলিয়ে এক দারুণ অভিজ্ঞতা দেয়। ঈদের ছুটিতে বন্ধু বা টিম নিয়ে গেলে এই অ্যাডভেঞ্চার আরও উপভোগ্য হয়। তবে ট্রেকিং কঠিন হওয়ায় সুস্থতা ও প্রস্তুতি থাকা জরুরি। স্থানীয় গাইড নেওয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাম হাম ঝর্ণা ঈদের দিনে একদিনের জন্য ভিন্নমাত্রার একটি রোমাঞ্চকর ও স্মরণীয় গন্তব্য হতে পারে।

মৌলভীবাজার জেলার গভীর জঙ্গলে অবস্থিত হাম হাম ঝর্ণা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের জন্য উপযুক্ত স্থান। এখানে ট্রেকিং করতে হয়, যা ঈদের ছুটিকে করে তোলে আরও রোমাঞ্চকর।

মাধবপুর লেক

পাহাড়, জল আর চা বাগানের অপূর্ব মিলন

সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত মাধবপুর লেক এক অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা লেক, যা ঈদ উল আজহার ছুটিতে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এক আদর্শ গন্তব্য ✔

মাধবপুর লেক এটি শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং সিলেট শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে সরাসরি বাস বা ট্রেনে ভানুগাছে পৌঁছে সেখান থেকে সিএনজি বা গাড়ি ভাড়া করে সহজেই মাধবপুর লেকে যাওয়া যায়।
পথে পড়ে অসংখ্য চা বাগান, পাহাড়ি দৃশ্য ও সবুজ প্রকৃতি, যা যাত্রাটাকেই করে তোলে উপভোগ্য।
মাধবপুর লেকটি পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত, যার চারপাশে ঘন সবুজ চা বাগান ও বনাঞ্চল। ঈদের সকালে এখানে সূর্যোদয়ের দৃশ্য কিংবা বিকেলে হালকা রোদে লেকের জলরাশি দেখতে পর্যটকরা ভিড় করেন। লেকপাড়ে বসে ছবি তোলা, নৌকাভ্রমণ কিংবা পাহাড়ি হাওয়ায় সময় কাটানো সত্যিই মনে রাখার মতো।

ঈদের ছুটিতে যারা স্বল্প ব্যস্ততা ও নিরিবিলি প্রকৃতি খুঁজছেন, তাদের জন্য মাধবপুর লেক হতে পারে একটি পরিপূর্ণ ও প্রশান্তিময় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত

বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাতে প্রকৃতির এক অনন্য আহ্বান

ঈদ উল আজহার ছুটিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য রূপ দেখতে চাইলে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত হতে পারে আপনার পরবর্তী ভ্রমণ গন্তব্য। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত, যা মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার।
সিলেট শহর থেকে মাধবকুণ্ডে যেতে হলে প্রথমে যেতে হয় মৌলভীবাজার শহরে, সেখান থেকে বাস বা সিএনজিতে বড়লেখা উপজেলার ধামাই রোড হয়ে সহজেই পৌঁছানো যায় জলপ্রপাত এলাকায়। প্রবেশ পথে টিকিট সংগ্রহ করে পাহাড়ি পথে হেঁটে যেতে হয় মূল ঝর্ণার পাদদেশে।
বর্ষাকালে ঝর্ণায় পানির প্রবাহ থাকে সবচেয়ে জোরালো, আর ঈদের সময় এই দৃশ্য চোখে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা এনে দেয়। পাহাড়, সবুজ বন, পাখির ডাক আর ঝর্ণার শব্দ মিলিয়ে প্রকৃতির এক মোহনীয় পরিবেশ তৈরি করে।
পর্যটকদের জন্য রয়েছে খাবারের দোকান, বিশ্রামের জায়গা ও ছবি তোলার মনোরম স্পট। ঈদের দিনে পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে একদিনের ভ্রমণ উপভোগ করতে মাধবকুণ্ড হতে পারে একটি চমৎকার ও স্মরণীয় গন্তব্য।


বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা হিসেবে পরিচিত মাধবকুণ্ড ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের জন্য অন্যতম পছন্দের স্থান। রয়েছে পিকনিক স্পট, গুহা, প্রাকৃতিক ছায়াঘেরা পথ।


তামাবিল ও ডাউকি ভিউ পয়েন্ট

সীমান্তে দাঁড়িয়ে অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের সুযোগ

সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা তামাবিল ও পাশের ভারতের ডাউকি ভিউ পয়েন্ট ✔

ঈদ উল আজহার ছুটিতে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এক বিশেষ গন্তব্য। সিলেট শহর থেকে তামাবিলের দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। শহর থেকে সরাসরি বাস, সিএনজি বা মাইক্রোবাসে জাফলং হয়ে সহজেই তামাবিলে যাওয়া যায়।

তামাবিল মূলত বাংলাদেশের বর্ডার পয়েন্ট, যেখানে দাঁড়িয়ে ভারতের মেঘালয়ের মনোমুগ্ধকর পাহাড় ও সবুজ দৃশ্য দেখা যায়। এখান থেকে ডাউকি নদী ও ভিউ পয়েন্টের অপরূপ দৃশ্য সহজেই উপভোগ করা যায়। যদিও ডাউকি মূলত ভারতের ভিতরে অবস্থিত, তবে বাংলাদেশ থেকে সীমান্তের গেট বরাবর দাঁড়িয়ে সেই নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দেখা সম্ভব।

ঈদের দিনে তামাবিল ও ডাউকি পয়েন্ট ভ্রমণে সড়কের পাশে ঘুরে বেড়ানো, ছবি তোলা এবং স্থানীয় দোকান থেকে পাহাড়ি খাবার উপভোগ করা যায়। একদিনের সফরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সীমান্তের ভিন্ন রকম অনুভূতির জন্য তামাবিল হতে পারে ঈদের একটি ব্যতিক্রমী ও স্মরণীয় গন্তব্য।


ভারতের মেঘালয় সীমান্তঘেঁষা এই জায়গাগুলো থেকে দেখতে পাবেন পাহাড়ি সৌন্দর্য আর ডাউকি নদীর স্বচ্ছ সবুজ পানি। জাফলং থেকে খুব কাছে হওয়ায় একই দিনে ঘুরে আসা যায় দুটি জায়গায়।

মালনীছড়া চা বাগান

সবুজে ঘেরা ঐতিহ্য ও প্রশান্তির এক ঠিকানাবাংলাদেশের প্রথম ও প্রাচীনতম চা বাগান

মালনীছড়া চা বাগান > যা সিলেট শহরের অদূরে অবস্থিত। শহরের কেন্দ্র থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরত্বে হওয়ায় ঈদ উল আজহার ছুটিতে অল্প সময়ে ঘুরে আসার জন্য এটি একটি আদর্শ ভ্রমণস্থান। রিকশা, সিএনজি কিংবা ব্যক্তিগত গাড়িতে খুব সহজেই মালনীছড়ায় পৌঁছানো যায়।

মালনীছড়া চা বাগান ১৮৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি এখনও সক্রিয়ভাবে চা উৎপাদন করে যাচ্ছে। এখানে ঢুকলেই চোখে পড়ে সবুজ চা পাতার সারি, পাহাড়ি ঢালুতে সাজানো গাছ আর নিরিবিলি পরিবেশ। ঈদের দিনে পরিবার নিয়ে এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সময় কাটানো মানেই শহরের কোলাহল থেকে কিছুক্ষণের জন্য মুক্তি।
পর্যটকদের জন্য এখানে রয়েছে হাঁটার পথ, ছবি তোলার উপযোগী জায়গা ও পাশে ছোট দোকান। সকাল কিংবা বিকেলের হালকা রোদে চা বাগানের মধ্য দিয়ে হাঁটলে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাওয়া যায়। মালনীছড়া চা বাগান একদিনের স্বল্প পরিসরের ঈদ ভ্রমণের জন্য নিঃসন্দেহে এক অনন্য স্থান।


এটি সিলেটের সবচেয়ে পুরনো চা-বাগান। সবুজে ঘেরা এই জায়গায় হাঁটাহাঁটি, ছবি তোলা এবং বিশ্রামের জন্য আদর্শ।

শাহজালাল (র.) ও শাহ পরান (র.) মাজার: সিলেটের ধর্মীয় স্থান

আধ্যাত্মিক প্রশান্তির এক পবিত্র যাত্রা

ঈদ উল আজহার পবিত্র দিনে শুধু বিনোদন নয়, বরং আত্মিক প্রশান্তি লাভেও সিলেটের শাহ জালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.) মাজার হতে পারে এক অনন্য গন্তব্য ✔ এই দুটি মাজারই বাংলাদেশের অন্যতম ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান, যা প্রতি বছর হাজারো ভক্ত পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকে।

হযরত শাহ জালাল মাজার ➤
শাহ জালাল (রহ.) মাজারটি সিলেট শহরের কেন্দ্রেই অবস্থিত, রিকশা বা অটোতে সহজেই শাহজালাল মাজারে পৌঁছানো যায়। এর পাশেই রয়েছে দরগাহ মসজিদ, পুকুর এবং পাখির খাঁচা, যা দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণ তৈরি করে। সবশেষে হযরত শাহ জালাল (রহ.) মাজারের পরিবেশটা অত্যান্ত চমৎকার ও প্রশান্তিময় একটা অভিজ্ঞতা দেয়।

হযরত শাহ পরান মাজার ➤
শাহ পরান (রহ.) মাজার সিলেট শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে খাদিম নগর এলাকায় অবস্থিত। বাস, সিএনজি বা ব্যক্তিগত গাড়িতে সহজেই যাওয়া যায়। পাহাড়ের ঢালে নির্মিত এই মাজারের পরিবেশটা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও মনোমুগ্ধকর একটা অভিজ্ঞতা দেয়। ঈদের দিনে পরিবারসহ এসব ধর্মীয় স্থানে সময় কাটানো মানেই আত্মিক প্রশান্তি ও ঐতিহ্যের সংস্পর্শে আসা। যারা ঈদে একটু ভিন্নধর্মী, আধ্যাত্মিক অনুভূতি পেতে চান, তাদের জন্য এই দুই মাজার হতে পারে অনন্য ভ্রমণ স্থান।

ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই ধর্মীয় স্থানগুলো ঈদের সময় মানুষের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।

হাকালুকি হাওর

এবারের ঈদে হাকালুকি হাওর ট্যুর সিলেট

হাওরের পানি, পাখি আর প্রকৃতির অপার বিস্ময়
বাংলাদেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি হাওর ✔
যা প্রকৃতিপ্রেমী ও পাখিপ্রেমীদের জন্য স্বর্গতুল্য। ঈদ উল আজহার ছুটিতে যারা ব্যস্ত শহরের কোলাহল ছেড়ে প্রকৃতির সান্নিধ্যে যেতে চান, তাদের জন্য হাকালুকি হাওর হতে পারে এক আদর্শ গন্তব্য। এটি সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার সংযোগস্থলে অবস্থিত এবং সিলেট শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে।
সিলেট শহর থেকে কুলাউড়া বা ফেঞ্চুগঞ্জ হয়ে বাস বা ট্রেনে প্রথমে পৌঁছাতে হয় কাছের উপজেলা—জুড়ী, বড়লেখা বা কুলাউড়া। সেখান থেকে স্থানীয় নৌকায় হাওরে প্রবেশ করা যায়। বর্ষাকালে হাওর জলমগ্ন থাকে, তখন নৌকাভ্রমণই এর মূল আকর্ষণ।
হাকালুকিতে হাজারো প্রজাতির দেশি-বিদেশি পরিযায়ী পাখি দেখা যায়, যা ঈদের ছুটিতে চোখে এনে দেয় প্রকৃতির রঙিন চিত্র। বিস্তৃত জলরাশি, ছোট ছোট দ্বীপ, কাঁচা রাস্তা ও লোকালয় মিলে এটি এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা দেয়।
এখানে মাছের বাজার, স্থানীয় খাবার ও অতিথিপরায়ণ মানুষ ঈদের ভ্রমণকে করে তোলে আরও উপভোগ্য। হাকালুকি হাওর একদিনের নৌকা-বিহার কিংবা গ্রামীণ প্রাকৃতিক জীবন উপভোগের জন্য এক অসাধারণ জায়গা।

ঈদের জন্য হোটেল ও রিসোর্ট বুকিং

Agoda.com


প্রস্তাবিত হোটেল ➤
Rose View Hotel > সিলেট
Hotel Noorjahan Grand > সিলেট
Bottomhill Palace > সিলেট
Dusai Resort & Spa > মৌলভীবাজার
Grand Sultan Tea Resort & Golf > শ্রীমঙ্গল
Swiss Vally Resort > শমশেরনগর

পর্যটকদের জন্য টিপস

  • ঈদের সময় ভিড় বেশি হয়, তাই বাস, ট্রেন ও হোটেল আগে থেকেই বুকিং করুন ✔
  • পাহাড়ি এলাকা ভ্রমণের সময় হালকা ব্যাকপ্যাক ও ট্র্যাকিং জুতা ব্যবহার করুন ✔
  • পানি ও স্ন্যাকস সাথে রাখুন ✔
  • স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি সম্মান দেখান ✔



FAQ প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

ঈদের ছুটিতে সিলেট ভ্রমণের সেরা সময় কখন?
ঈদের ছুটিতে সিলেট ভ্রমণের সেরা সময়টা হলো ঈদের ঠিক আগের দিনগুলোতেই সবচেয়ে ভালো, যাতে ট্রাফিক এবং হোটেলের ভিড় এড়ানো সম্ভব হয়।

জাফলং ও বিছানাকান্দি একদিনে ঘোরা যাবে?
না! জাফলং ও বিছনাকান্দি দুই জায়গা দুই দিকে অবস্থিত হওয়ায় দুই দিনে আলাদা ভ্রমণ করাই সবচেয়ে ভালো।

সিলেটে নিরাপত্তা কেমন ঈদের সময়?
সাধারণত পর্যটকদের জন্য নিরাপদ। তবে নিজের ব্যক্তিগত জিনিসপত্রের প্রতি নিজেকে সচেতন থাকতে হবে।

হোটেল বুকিং কি আগে করাই ভালো?
অবশ্যই! ঈদের সময় হোটেল বুকিং পাওয়া খুবই কঠিন হয়, সেজন্য আগে থেকেই হোটেল বুকিং করা সবচেয়ে ভালো।

কোন অ্যাপ দিয়ে ট্রেন/বাসের টিকিট বুক করবো?
shohoz.com এবং railway.gov.bd ট্রেন ও বাসের টিকিট বুকিংয়ের জন্য নির্ভরযোগ্য।

Post a Comment

Previous Post Next Post