Student Loan IN London 😍😍 জেনে নিন লোন নিয়ে লন্ডনের পড়াশোনার খরচ মেটানোর উপায়

বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীদের কাছে লন্ডন স্বপ্নের শহর। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবর মানসম্মত শিক্ষা দেয় না শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে অসীম সুযোগ আর সুবিধা তবেঃ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চ টিউশন ফি আর জীবনযাত্রার ব্যয়। অনেক শিক্ষার্থী সেই সমস্যার সমাধান হিসেবে লন্ডনে স্টুডেন্ট লোন গ্রহণ করে থাকে। স্টুডেন্ট লোনের মাধ্যমে টিউশন ফি আর আবাসন বা অন্যান্য খরচ মেটানো সহজ হয়। বিশেষ করেঃ যুক্তরাজ্য সরকারের স্টুডেন্ট ফাইন্যান্স ব্যবস্থা আর বিভিন্ন লন্ডনের প্রাইভেট ব্যাংক সকল শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ভরযোগ্য সমাধান হিসেবে হয়ে উঠেছে।

আমাদের আজকের কনটেন্টে আমরা লন্ডনের স্টুডেন্ট লোন কী? কেন লন্ডনে স্টুডেন্ট লোন প্রয়োজন হয়? কারা কারা লন্ডনে স্টুডেন্ট লোন পেতে পারবে? কিভাবে লন্ডনে স্টুডেন্ট লোনের জন্য আবেদন করতে হয়? লন্ডনে স্টুডেন্ট লোনের জন্য আবেদন করার নিয়ম? কিভাবে লন্ডনে স্টুডেন্ট লোনের রিপেমেন্ট করতে হবে? লন্ডনে স্টুডেন্ট লোনের রিপেমেন্ট করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণ সহকারে জানবো আর তাইঃ পুরো বিষয়টি বিস্তারিত ক্লিয়ার করে জানতে অবশ্যই পুরো কনটেন্ট পড়বেন আর বুঝার চেষ্টা করবেন📍

লন্ডনের স্টুডেন্ট লোন কী 🤔🤔🤔

লন্ডনের স্টুডেন্ট লোন হলো এমন একটি আর্থিক সহায়তা যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচ বহনে সাহায্য করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি, আবাসন, খাবার, জীবনযাত্রার অন্যান্য খরচ মেটাতে সেটি ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাজ্যে মূলতঃ সরকারী সংস্থা Student Finance England আর কিছু প্রাইভেট ব্যাংক সেই ধরনের লোন প্রদান করে। UK আর EU শিক্ষার্থীরা সহজেই সেই লোনের আওতায় আসতে পারে তবেঃ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য লোনের শর্ত তুলনামূলক কঠিন। পড়াশোনার সময় সেই লোন ফেরত দিতে হয় না। শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে নির্দিষ্ট আয়ের সীমা পার করলে লোনের রিপেমেন্ট করা হয়। তাই লন্ডনে উচ্চশিক্ষা নিতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি কার্যকর অর্থনৈতিক সমাধানের আওতার মধ্যে পরে।

লন্ডনে স্টুডেন্ট লোন কেন প্রয়োজন 🤔🤔🤔

লন্ডন বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল শহর। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মান খুবই উন্নত তবেঃ সেখানে খরচ অনেক বেশি। কেবলমাত্র টিউশন ফি ই অনেক ক্ষেত্রে বছরে £10,000 থেকে £35,000 ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। তার সাথে যোগ হয় আবাসন, খাবার, যাতায়াত, অন্যান্য খরচ যা মাসে গড়ে £1,200 থেকে £1,800 ইউরো পর্যন্ত দাঁড়ায়। এতো বেশি বিশাল ব্যয় একসাথে বহন করা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই স্টুডেন্ট লোন শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ভরযোগ্য সমাধান। তার মাধ্যমে তারা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে আর খরচের চাপ সামলাতে পারে। স্টুডেন্ট লোনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলোঃ সেই লোন পড়াশোনার সময় ফেরত দিতে হয় না। চাকরি পাবার পর আর আয় নির্দিষ্ট সীমার উপরে চলে গেলে কিস্তির মাধ্যমে সেটা অনেকটা সহজেই পরিশোধ করা যায়।

লন্ডনে স্টুডেন্ট লোনের বিষয়সমূহ

লন্ডনে স্টুডেন্ট লোন বিভিন্ন ধরণের খরচ কভার করে যাতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অনেক বেশি করে মনোযোগ দিতে পারে লন্ডনে স্টুডেন্ট লোন সাধারণতঃ তিনটি প্রধান ক্ষেত্রে বিভক্ত হয় যেমনঃ

1️⃣ Tuition Fee Loan

সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের টিউশন ফি কভার করে। শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে টাকা পরিশোধ করতে হয় না আর সরকার বা লোন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি ফি প্রদান করে।

2️⃣ Maintenance Loan

আবাসন, খাবার, যাতায়াত, বই আর দৈনন্দিন খরচ মেটাতে সাহায্য করে। কত টাকা পাওয়া যাবে সেটা নির্ভর করে শিক্ষার্থীর পরিবারের আয় পরিমান আর বসবাসের স্থান বা পড়াশোনার ধরনের উপর।

3️⃣ Private Student Loan

কিছু ব্যাংক বা প্রাইভেট ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন থেকে নেওয়া যায়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সেটি বেশি কার্যকর তবেঃ শর্ত কিছুটা কঠিন আর সুদের হার তুলনামূলকভাবে কিন্তু অনেক বেশি।

তাছাড়াঃ স্টুডেন্ট লোন সাধারণত পড়াশোনা

চলাকালীন পরিশোধ করতে হয় না। পড়াশোনা শেষে চাকরি পাবার পর আর আয়ের নির্দিষ্ট সীমার উপরে গেলে সেটা ধাপে ধাপে রিপেমেন্ট করা হয়।

কারা লন্ডনে স্টুডেন্ট লোন পেতে পারে?

লন্ডনে স্টুডেন্ট লোন পাওয়ার যোগ্যতা শিক্ষার্থীর নাগরিকত্ব, ভিসা স্ট্যাটাস, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির উপর নির্ভর করে সাধারণতঃ যুক্তরাজ্যের নাগরিক আর স্থায়ী বাসিন্দারা সহজেই সরকারি Student Finance England এর মাধ্যমে লোন পেতে পারে। এছাড়াঃ EU শিক্ষার্থীরা কিছু ক্ষেত্রে সেই সুবিধা ভোগ করতে পারে তবেঃ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য লন্ডনে সরকারি লোন পাওয়া কঠিন; তারা সাধারণত প্রাইভেট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্টুডেন্ট লোন গ্রহণ করতে পারে। শর্ত হিসেবে অবশ্যই স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল টাইম বা পার্ট টাইম কোর্সে ভর্তি থাকতে হবে। বৈধ স্টুডেন্ট ভিসা থাকতে হবে আর প্রয়োজনীয় আর্থিক নথিপত্র জমা দিতে হবে। স্টুডেন্ট লোন মূলতঃ তাদের জন্য যারা আনুষ্ঠানিকভাবে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে আর নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদন্ড পূরণ করছে।

কিভাবে লন্ডনে স্টুডেন্ট লোনের জন্য আবেদন করতে হবে আবেদন করার নিয়ম

লন্ডনে স্টুডেন্ট লোনের জন্য আবেদন করা বেশ সহজ তবেঃ কিছু বিষয় অনুসরণ করতে হয়। সাধারণতঃ লন্ডনের শিক্ষার্থীরা UK Government Student Finance আর যেকোনো প্রাইভেট ব্যাংকের মাধ্যমে লোনের জন্য আবেদন করে।

1️⃣ সরকারি অয়েবসাইটে আবেদন

UK শিক্ষার্থী আর EU শিক্ষার্থীরা gov.uk/student-finance অয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারে। সেখানে প্রয়োজন হয় ব্যক্তিগত তথ্য আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অফারের লেটার আর শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্রের কপি।

2️⃣ ব্যাংক কিংবা প্রাইভেট লোনের আবেদন

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা সাধারণত ব্যাংক কিংবা প্রাইভেট ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন থেকে লোন নিতে পারে। সেই প্রক্রিয়ায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ভিসা স্ট্যাটাস, শিক্ষার্থী, অভিভাবকের আয়ের প্রমাণ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির কাগজপত্র জমা দিতে হয়।

3️⃣ আবেদন ফি আর ডকুমেন্ট

সরকারি লোনের ক্ষেত্রে সাধারণত আবেদন করা কিন্তু ফ্রি আর প্রাইভেট লোনের ক্ষেত্রে কিছু ফি থাকতে পারে। আবেদন করার সময় ভর্তির অফার লেটার, পাসপোর্ট, ন্যাশনাল আইডি কার্ড আর আয়ের তথ্য অবশ্যই কিন্তু জমা দিতে হবে।

4️⃣ লোন অনুমোদন আর বিতরন ব্যবস্থা

সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আবেদন যাচাই হয়ে লোন অনুমোদিত হয়। সেখান থেকে টিউশন ফি কিন্তু সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা হয় আর মেইনটেইন্স লোন শিক্ষার্থীর ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সরাসরি ট্রান্সফার করে সেখানে দিয়ে দেওয়া হয়।

লন্ডনে স্টুডেন্ট লোনের আবেদন প্রক্রিয়া সুন্দর আর সঠিকভাবে অনুসরণ করলে পড়াশোনার খরচ ইত্যাদি অন্যান্ন খরচ খুব সহজেই সামলানো যায়।

লন্ডনের স্টুডেন্ট লোনের রিপেমেন্ট কিভাবে করতে হবে আর রিপেমেন্ট করার নিয়ম

লন্ডনে স্টুডেন্ট লোন সাধারণতঃ পড়াশোনার সময় ফেরত দিতে হয় না। শিক্ষার্থী যখন কোর্স শেষ করে পূর্ণকালীন চাকরিতে জয়েন করে আর বার্ষিক আয় একটি নির্দিষ্ট সীমা বর্তমানে £27,295 ছাড়িয়ে যায় তখন ধাপে ধাপে Repayment চালু হয়। ফেরতের পরিমাণ শিক্ষার্থীর আয়ের উপর নির্ভর করে সাধারণতঃ আয়ের 9% প্রতি মাসে কেটে নেওয়া হয়। লোনের উপর কিছু Interest ধার্য থাকে যা আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়। ইউকে সরকারের স্টুডেন্ট ফাইন্যান্স ব্যবস্থায় সুদের হার তুলনামূলক কম। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলোঃ নির্দিষ্ট সময় সাধারণতঃ 30 বছর পর লোন পুরোপুরি শোধ না হলে সরকারি লোনের অবশিষ্ট টাকা মাফ করা হয়। ফেরত দেওয়া প্রক্রিয়া সহজ; চাকরির মাধ্যমে Automatic Salary Deduction অথবা Student Finance Online Account থেকে Online Payment করা যায়। সেই ব্যবস্থার কারণে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার সময় আর্থিক চাপ অনেকটা কম অনুভব করে আর পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে সেই লোন পরিশোধ করতে পারে।