36 জুলাইয়ের ইতিহাস !!! বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ আর নতুন প্রত্যয়ের দিন

36 জুলাইয়ের ইতিহাস !!! বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ আর নতুন নতুন স্বাধীনতা দিবসের প্রত্যয়ের দিন


দুই হাজার চব্বিশ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটে যায় এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান! ছাত্র জনতার কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন রূপ নেয় সারা দেশের বিক্ষোভে, যা শেষ পর্যন্ত জুলাই গণহত্যা আর শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতার মধ্যে জায়গা করে নেয়।

আপনি হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন?
36 জুলাই মানে কী বা 36 জুলাই বলতে কি বুঝায় বা 36 জুলাই দিনটি আসলে কী বা কেন 36 জুলাই বলা হয়? 36 জুলাইয়ের রহস্য কী?
আপনার এই সকল প্রশ্নের উত্তর হলোঃ আসলে ৩৬ জুলাই বলতে ৫ আগস্ট ২০২৪ এই তারিখকে বুঝায় যা বাংলাদেশের প্রতীকী দিন হিসেবে ৩৬ জুলাই নামে বা জুলাই বিপ্লব বা বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পরিচিত আর আজকের এই দিনে স্মরণ করা হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন শহীদদের সাহসিকতা আর জনগণের ঐক্যের পাশাপাশিঃ গণতান্ত্রিক চেতনার জয়গান হিসেবে।

আজ ৫ আগস্ট ২০২৫ বাংলাদেশে দিনটি পালিত হচ্ছে July Mass Uprising Day বা ৩৬ জুলাই দিবস বা বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতা দিবস হিসেবে। রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ সহ দেশব্যাপী চলছে স্মরণসভা, সাংস্কৃতিক, অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক সমাবেশ আর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন কার্যক্রম ইত্যাদি।
আজকের এই দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়? গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকারের জন্য ঐক্যবদ্ধ জনগণের শক্তি অপ্রতিরোধ্যভাবে কাজ করে।



36 জুলাই নামকরণের পেছনের ইতিহাস

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে থাকে আর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে আন্দোলনের চূড়ান্ত সাফল্য আসে।

আন্দোলনটি জুলাই মাসের সীমা অতিক্রম করায় মানুষ প্রতীকীভাবে আগস্টের ৫ তারিখকে ৩৬ জুলাই নামে ডাকতে শুরু করে। এটি বোঝায় যে স্বাধীনতা আর গণতন্ত্র ও ন্যায়ের জন্য জনগণের ঐক্য কোনো মাসের সীমায় বাঁধা নয় আর এই নামকরণ শহীদদের ত্যাগ আর জনগণের জাগরণের পাশাপাশিঃ বাংলাদেশের ইতিহাসের অনন্য অধ্যায়কে স্মরণ করিয়ে দেয়।



2024 সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের টাইমলাইন

২০২৪ সালের ৫ জুন সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের ঘোষণার পর দেশজুড়ে ছাত্র জনতার অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে আর ১ জুলাই থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং ক্লাস শাটডাউন শুরু হয়। এরপরঃ ১৫ আর ১৬ জুলাই দমন পীড়ন চরম পর্যায়ে উঠে পরে তারপরঃ ঘটে ভয়াবহ জুলাই গণহত্যা যেখানে শত শত মানুষ নিহত আর আহত হয় আর পরবর্তী দিনগুলোতে আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং জনরোষ তীব্রতর হয়। অবশেষেঃ ৫ আগস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনা স্বৈরাচারী পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করে নেয়। এই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র জনতার ঐক্য, গণতন্ত্রের দাবি, স্বৈরাচারের পতনের প্রতীক হিসেবে অমর হয়ে থাকে।



আজকের 36 জুলাই বা 5 আগস্ট 2025 উদযাপনের প্রধান দিক

আজকের দিনটি বাংলাদেশে প্রতীকীভাবে ৩৬ জুলাই নামে পরিচিত আর জাতীয়ভাবে July Mass Uprising Day হিসেবে পালিত হচ্ছে। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ সকাল থেকেই জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শহীদ স্মরণসভা, গান, কবিতা, নাটকসহ নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন আর বিকেল ৫টায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মাদ ইউনূস July Declaration পাঠ করবেন যা গণতান্ত্রিক রোডম্যাপ হিসেবে বিবেচিত হবে। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে ২,০০০ ড্রোনের আলো নাটক Do You Miss Me আর রাতের শেষ ভাগে Artcell ব্যান্ডের গ্র্যান্ড কনসার্ট পরিবেশিত হবে। সারাদেশে শহীদ স্মরণ, শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা চলার মধ্য দিয়ে দিনটি ঐক্য, স্মরণ আর নতুন বাংলাদেশের প্রত্যয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।



36 জুলাই উদযাপনের প্রয়োজন কতটুকু?

36 জুলাই আমাদেরকে কী শিক্ষা দেয়?

36 জুলাই আগামী প্রজন্মকে কী শিক্ষা দেয়?

৩৬ জুলাই বা July Mass Uprising Day বা জুলাই বিপ্লব উদযাপনের প্রয়োজন শুধু ইতিহাস স্মরণ নয় বরং আমাদেরকে আর আমাদের নতুন প্রজন্মকে গণতন্ত্রের চেতনা শেখানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের শিখিয়েছে যে জনগণের ঐক্যমত স্বৈরশাসনের পতন ঘটাতে পারে। এই দিন উদযাপনের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় আর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শিক্ষা জীবন্ত থাকে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এটি সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াঃ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রচর্চার ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে যায় এবং জাতি হিসেবে আমাদের আত্মপরিচয়কে আরো অনেক দৃঢ় করে।

Post a Comment

Previous Post Next Post