আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জীবনী আর ইতিহাসের পাতায় অবদান

আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জীবনী আর ইতিহাসের পাতায় অবদান


আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে কিছু কথা

বাংলাদেশের ধর্মীয় অঙ্গনের এক অনন্য নাম আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী। তিনি ছিলেন কেবল একজন ওয়ায়েজ নন, বরং একাধারে একজন প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা, কোরআনের ব্যাখ্যাকার, রাজনৈতিক নেতা এবং সমাজ সংস্কারক। তাঁর জীবন ছিল প্রচার, শিক্ষা, রাজনীতি ও সংগ্রামের সমন্বয়। যদিও তিনি রাজনৈতিক বিতর্ক ও বিচারিক প্রক্রিয়ার কারণে অনেক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন, তবুও তাঁর ইসলামী বক্তৃতা ও তাফসীরের মাধ্যমে লাখো মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন।


আরো স্টাটাস রিলেটেড আর্টিকেল পড়ুন ⬇️



আল্লামা সাঈদির প্রাথমিক জীবন

জন্ম: ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০ সালে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার সাঈদখালী গ্রামে।
পিতা: মাওলানা ইউসুফ সাঈদী — একজন সম্মানিত আলেম।
শৈশব: ছোটবেলা থেকেই তিনি ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। পরিবার ও সমাজে ইসলামী অনুশাসনের প্রভাব তাঁর চরিত্রে গভীরভাবে ছাপ ফেলেছিল।



আল্লামা সাঈদির শিক্ষা জীবন

আল্লামা সাঈদী প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন নিজ গ্রামে। পরে খুলনা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।
কামিল ডিগ্রি: ১৯৬২ সালে সরছিনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে অর্জন।
শিক্ষাজীবনে তিনি কোরআন, হাদিস, ফিকহ, তাফসীর, আরবি সাহিত্য, দর্শন ও ইতিহাস বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন।
শিক্ষা শেষ করেই তিনি ধর্মপ্রচারকে জীবনের মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করেন।



আল্লামা সাঈদির পারিবারিক জীবন

আল্লামা সাঈদী ছিলেন অসাধারণ বক্তা।
তাঁর তাফসীর মাহফিলে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হতো।
ইসলামি আদর্শ ও নৈতিকতার ওপর তাঁর ব্যাখ্যা মানুষের হৃদয় স্পর্শ করত।
জীবদ্দশায় তিনি ৫০টিরও বেশি দেশে ইসলামী দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছেন।
মক্কা ও মদিনায় বহুবার বক্তৃতা দিয়েছেন এবং সৌদি বাদশাহ কর্তৃক আমন্ত্রিত হয়েছেন।



আল্লামা সাঈদির রাজনৈতিক জীবন

১৯৭৯ সালে জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশে যোগদান।
১৯৯৬ ও ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য (পিরোজপুর-১)।
সংসদে ধর্ম বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কওমী মাদরাসার সরকারি স্বীকৃতি প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।



আল্লামা সাঈদির জেল জীবন

২০১১ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
২০১৩ সালে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা হলেও ২০১৪ সালে তা আমৃত্যু কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়।
এই রায় দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়।



আল্লামা সাঈদির মৃত্যু

১৪ আগস্ট ২০২৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার ভক্ত হাসপাতালে সমবেত হন।
তাঁর জানাজায় লাখো মানুষ অংশ নেয়, যা তাঁর জনপ্রিয়তা ও মানুষের ভালোবাসার প্রমাণ বহন করে।



আল্লামা সাঈদির অবদান

ইসলামি দাওয়াত ও তাফসীরের মাধ্যমে তিনি অসংখ্য মানুষকে প্রভাবিত করেছেন।
তাঁর বক্তৃতা ও রচনাসমূহ এখনো ইসলামী শিক্ষার মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়।
তিনি "কোরআনের পাখি" উপাধিতে সম্বোধিত হয়েছিলেন।



আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে শেষ কথা

আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী ছিলেন এক বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব—আলেম, বক্তা, নেতা ও সমাজ সংস্কারক। জীবনে যেমন তিনি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন, তেমনি তীব্র সমালোচনার মুখোমুখিও হয়েছেন। কিন্তু যেভাবেই তাঁকে দেখা হোক না কেন, তাঁর ধর্মীয় অবদান ও প্রভাব অস্বীকার করা যাবে না।


আমাদের ইসলামিক প্রতিবেদন পড়ুন ⬇️


আমাদের সকল আপডেট টেলিগ্রামে পেতে চাইলে জয়েন করতে পারেন ⬇️

Post a Comment

Previous Post Next Post