Asian Futball Confederation (AFC) কতৃক আয়োজিত তরুণ খেলোয়াড়দের বাছাইয়ের জন্য সবচেয়ে বড় আসরের একটি হলো U23 Asian Cup Qualifiers আর এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশের অনূর্ধ্ব 23 দলেরা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে মূল আসরে জায়গা করে নেবার সুযোগ পায়। একদিকে যেমন এটি প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জনের দরজা খুলে দেয় অন্যদিকে জাতীয় দলের ভবিষ্যত শক্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করে আর এখান থেকেই অনেক ফুটবলার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পায় তার পরবর্তীতে বিশ্ব ফুটবল আসরে নিজেদের প্রতিভা প্রদর্শন করে। তাই বলা যায়ঃ U23 এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্স কেবল একটি বাছাইপর্ব নয় এশিয়ান ফুটবলের আগামী দিনের তারকাদের জন্ম দেবার একটি বিশাল আসর।
U23 এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্স কী?
U23 Asian Cup Qualifiers হলোঃ Asian Futball Confederation (AFC) আয়োজিত একটি বাছাই পর্বের প্রতিযোগিতা যেখানে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অনূর্ধ্ব 23 জাতীয় দল অংশ নেয়। কোয়ালিফায়ার্স টুর্নামেন্টের মূল উদ্দেশ্য হলোঃ এশিয়ার তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ করে দেবার আর মূল AFC U23 Asian Cup টুর্নামেন্টে জায়গা করে নেবার। বাছাইপর্বে প্রতিটি দেশকে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করা হয় তারপরঃ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি ফুটবলের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে এছাড়াঃ সেরা রানার্স আপ দলকে সুযোগ দেওয়া হয়। এটি তরুণ খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে জায়গা পাবর সিঁড়ি আর অলিম্পিকসহ বড় টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুতি নেবার গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ।
U23 এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সের প্রয়োজনীতা কতটুকু?
U23 Asian Cup Qualifiers এশিয়ার ফুটবল উন্নয়নে অত্যন্ত ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখে। এই টুর্নামেন্ট কেবল তরুণ খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক মানের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগই দেয় না তাদের প্রতিভা প্রদর্শনের বড় জায়গা তৈরি করে। এখান থেকেই অনেক খেলোয়াড় জাতীয় দলে জায়গা করে নেয় আর ভবিষ্যতের ফুটবলের তারকা হয়ে উঠে এছাড়াঃ বিভিন্ন ক্লাবের স্কাউটরা তরুণদের পারফরম্যান্স দেখে সুযোগ দেবার জন্য নজর রাখে। জাতীয় দলের জন্য ভবিষ্যত প্রস্তুত করার পাশাপাশিঃ এটি অলিম্পিক ফুটবলের যোগ্যতা অর্জনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আর তাইঃ এশিয়ার প্রতিটি দেশের ফুটবল কাঠামো শক্তিশালী করতে এশিয়ান কাপের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।U23 এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সে কতটি দেশ খেলার সুযোগ পায়?
U23 Asian Cup Qualifiers এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (AFC) এর সব সদস্য দেশই খেলার সুযোগ পায়। বর্তমানে (AFC) এর সদস্য দেশ সংখ্যা 47টি আর সাধারণতঃ প্রায় সবাই বাছাইপর্বে অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী দলেরা কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করা হয় যেখানে প্রতিটি গ্রুপের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় হোম অ্যান্ড অ্যাঅয়ে বা নির্দিষ্ট ভেন্যুতে। প্রতি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে আর সেরা রানার্স আপ দলেরা মূল টুর্নামেন্টে জায়গা পায়। ফলে প্রায় 40টির বেশি দল কোয়ালিফায়ার্সে লড়াই করে যেখান থেকে মাত্র 16টি দল মূল AFC U23 Asian Cup টুর্ণামেন্টে খেলার সুযোগ পায়।U23 এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সে বাংলাদেশ ফুটবল দলের অবস্থান কেমন?
বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব 23 জাতীয় ফুটবল দল নিয়মিতভাবেই U23 এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সে অংশ নিচ্ছে তবেঃ বাস্তবতা হলোঃ বাংলাদেশ এখনো মূল টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। দলের পারফরম্যান্স বেশিরভাগ সময়েই গ্রুপ পর্বেই থেমে যায়। যার অন্যতম কারণ হলোঃ অভিজ্ঞতার অভাব, টেকনিক্যাল ঘাটতি, শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার অসুবিধা তবেঃ ইতিবাচক দিক হলোঃ প্রতি আসরে তরুণ খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (BPL) থেকে উঠে আসা অনেক তরুণ এই পর্যায়ে খেলার সুযোগ পাচ্ছে যা ভবিষ্যতে জাতীয় দলের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে। সঠিক পরিকল্পনা আর উন্নত কোচিং এবং অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এশিয়ান পর্যায়ে বাংলাদেশ ফুটবল দল আরো অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়ে উঠতে পারে।
U23 এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সে কোন খেলোয়াড়ের দিকে নজর থাকতে পারে?
U23 Asian Cup Qualifiers প্রতিবারই কিছু নতুন মুখ উঠে আসে যারা ভবিষ্যতে এশিয়া তথা বিশ্ব ফুটবলে তারকা হয়ে উঠার সম্ভাবনা রাখে। এশিয়ার শক্তিশালী দল যেমন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান, সৌদি আরবের তরুণ খেলোয়াড়দের দিকেই সবার নজর বেশি থাকে বিশেষ করেঃ জাপানের টেকনিক্যাল মিডফিল্ডাররা আর কোরিয়ার দ্রুতগতি সম্পন্ন ফরোয়ার্ডরা বা উজবেকিস্তানের শারীরিকভাবে শক্তিশালী ডিফেন্ডাররা সবসময় সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থাকে। বাংলাদেশ দলের ক্ষেত্রে নজর থাকবে স্থানীয় লিগে ভালো করা কয়েকজন তরুণের দিকে। ফরোয়ার্ড লাইনে দ্রুতগতি সম্পন্ন স্ট্রাইকার, মিডফিল্ডে সৃজনশীল খেলোয়াড়, গোলরক্ষকের পারফরম্যান্স অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। যদি তারা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামতে পারে তবেঃ আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ তাদের হাতেই থাকবে।