মুখের বলিরেখা বা ব্রণ কমানো আজকাল অনেক মেয়েদেরই প্রধান ত্বকের উদ্বেগের বিষয়। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের কোলাজেন আর ইলাস্টিন হ্রাস পায় যার ফলেঃ মুখের ত্বক নরম হয়ে যায় আর বলিরেখা বা ব্রণ তৈরি হয়। বর্তমান বাজারে বিভিন্ন রকমের ক্রিম, সিরাম, ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায় যা বলিরেখা কমাতে আর ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে তবেঃ সব ক্রিমই কার্যকর নয়। আমাদের আজকের কনটেন্টে আমরা মেয়েদের মুখের হাল কমানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকরী তিনটি ক্রিম আলাদা করেছি Low, Medium, High Quality ক্রিম অনুযায়ী পাশাপাশিঃ আমরা মুখের হাল কমানোর জন্য ক্রিমের ব্যবহার পদ্ধতি, উপকারিতা, সতর্কতা আর ক্রিম ব্যবহারের সঙ্গে অন্যান্য ত্বকের যত্ন সম্পর্কিত জরুরি তথ্য উপস্থাপন করেছি যেটা আপনাকে ব্রণ কমানোর ক্রিমের সঠিক ব্যবহার আর আপনাকে বলিরেখা কমানোর সঠিক ক্রিম বেছে নিতে অনেক বেশি সহায়তা করবে।
কম বাজেটের মধ্যে ব্রণ কমানোর ক্রিম
Nivea Q10 Power Anti Wrinkle + Firming Night Cream | নিভিয়া কিউ অ্যান্টি রিঙ্কল ক্রিম হলোঃ অত্যন্ত বেশি কার্যকরী আর সাশ্রয়ী দামের হাল কমানোর ক্রিম যা মুখের বলিরেখা কমানো আর ত্বককে টানটান রাখার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেক বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। নিভিয়া কিউ 10 ক্রিমের মূল উপাদান হলোঃ কিউ 10 বা Coenzyme Q10 ক্রিয়েটিন Creatine আর হায়ালুরোনিক অ্যাসিড Hyaluronic Acid যা ত্বকের গভীর স্তরে কাজ করে। নিভিয়া কিউ 10 ত্বকের কোষ পুনর্গঠন বাড়ায় আর বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে, ক্রিয়েটিন ত্বকের ইলাস্টিসিটি উন্নত করে, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেটেড রাখে। নিভিয়া কিউ 10 ব্যবহারের সঠিক উপায় হলোঃ রাতের বেলায় নিয়মিত ব্যবহারে প্রায় 4 থেকে 6 সপ্তাহের মধ্যে ত্বক মসৃণ, টানটান, উজ্জ্বল হবার লক্ষ্য করা যায়। ক্রিমটি সংবেদনশীল ত্বকের জন্য নিরাপদ আর দৈনন্দিন ব্যবহারে ত্বকের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। লো বাজেটের মধ্যে মুখের ব্রণ কমানো সবচেয়ে কার্যকরী ক্রিম হিসেবে বিবেচিত হয় আর যারা বলিরেখা কমাতে বা ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে চান তাদের জন্য উপযুক্ত সমাধান।
মিডিয়াম বাজেটের মধ্যে ব্রণ কমানোর ক্রিম
Neutrogena Rapid Wrinkle Repair Daily Face Moisturizer SPF 30 | নিউট্রোজেনা র্যাপিড রিঙ্কল রিপেয়ার ডেইলি ফেস ময়েশ্চারাইজার ক্রিম হলোঃ প্রিমিয়াম বা মিডিয়াম বাজেটের হাল কমানোর ক্রিম যা মুখের বলিরেখা কমানো আর ত্বককে টানটান বা উজ্জ্বল রাখার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে আর ক্রিমটি বর্তমানে ব্যবহারের দিক থেকে অনেক বেশি জনপ্রিয় রয়েছে। নিউট্রোজেনা র্যাপিড রিঙ্কল ক্রিমের মূল উপাদান হলোঃ ক্রিমে রয়েছে রেটিনল (Retinol) আর হায়ালুরোনিক অ্যাসিড (Hyaluronic Acid) যা ত্বকের কোষ পুনর্গঠন করে আর বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। রেটিনল ত্বকের গভীরে কাজ করে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় ফলেঃ ত্বক মসৃণ আর টানটান হয়। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেটেড রাখে। SPF 30 ক্রিমে সানস্ক্রিন প্রোটেকশন থাকার কারণে সেটি দিনের বেলায় ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। নিউট্রোজেনা র্যাপিড রিঙ্কল ক্রিম ব্যবহারের সঠিক উপায় হলোঃ দিনের বেলায় নিয়মিত ব্যবহারে প্রায় 4 থেকে 6 সপ্তাহের মধ্যে ত্বক উজ্জ্বল, হাইড্রেটেড, বলিরেখা কমে যাবার লক্ষ্য করা যায়। ক্রিমটি সংবেদনশীল আর প্রাপ্তবয়স্ক ত্বকের জন্য নিরাপদ আর দৈনন্দিন ব্যবহারে ত্বকের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। মিডিয়াম বাজেটের মধ্যে মুখের ব্রণ কমানোর সবচেয়ে কার্যকরী ক্রিম হিসেবে অ্যান্টি ময়েশ্চারাইজার ক্রিমে বিবেচিত হয় সবার কাছে।
বেস্ট বাজেটের মধ্যে ব্রণ কমানোর ক্রিম
Estée Lauder Advanced Night Repair | অ্যাস্তি লাউডার অ্যাডভান্সড নাইট রিপেয়ার ক্রিম হলোঃ হাই কোয়ালিটির ব্রণ কমানোর ক্রিম বা প্রিমিয়াম স্কিনকেয়ার সিরাম ক্রিম যা ত্বকের Aging সাইন কমানো, মেরামত করা, ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার জন্য তৈরি। অ্যাস্তি লাউডার অ্যাডভান্সড ক্রিমের মূল উপাদান হলোঃ ক্রিমে রয়েছে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড (Hyaluronic Acid) অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস (Antioxidants) আর Chronolux CB™ Technology যা ত্বকের গভীর স্তরে কাজ করে কোষ পুনর্গঠন করে আর ড্যামেজড স্কিন রিপেয়ার করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের বলিরেখা আর ফাইন লাইন দৃশ্যমানভাবে কমে আসে, ত্বক হয় মসৃণ, টানটান আর উজ্জ্বল বিশেষ করেঃ যারা শোষ্ক, ক্লান্ত, প্র Mature Aging ত্বকের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য সেটি সবচেয়ে কার্যকর সমাধান হিসেবে কাজ করে।
অ্যাস্তি লাউডার অ্যাডভান্সড ক্রিম ব্যবহারের সঠিক উপায় হলোঃ সেরাম ক্রিমটি সাধারণত রাতের বেলায় ক্লিনজিংয়ের পর ব্যবহার করা হয় আর ক্রিমের হালকা টেক্সচার ত্বকে সহজে শোষিত হয়। ক্রিমটি 2 থেকে 3 সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে আর দীর্ঘমেয়াদে Aging সাইন ধীর হয়ে যায়। তবেঃ ক্রিমটির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি কিছু ক্রিমটি প্রিমিয়াম ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় আর বিশ্বব্যাপী ডার্মাটোলজিস্টদের দ্বারা সুপারিশকৃত ক্রিম হিসেবে ব্যাপক পরিচিত।
সেই তিনটি ক্রিম কি সত্যিই মুখের হাল কমানোর জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর হবে?
হ্যাঁ অবশ্যই তবেঃ কার্যকারিতা নির্ভর করে বাজেট আর ত্বকের অবস্থা বা ব্যবহার অভ্যাসের উপর। Nivea Q10 Power Anti Wrinkle + Firming Night Cream মূলতঃ লো বাজেটে হালকা বলিরেখা আর ত্বকের ঢিলাভাব কমাতে সাহায্য করে। Neutrogena Rapid Wrinkle Repair Daily Face Moisturizer SPF 30 রেটিনল আর SPF সুরক্ষার কারণে মিড বাজেটে দ্রুত ফল দেয় আর সূর্যের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। Estee Lauder Advanced Night Repair মূলতঃ হাই কোয়ালিটি আর সহজে কমানোর সমাধান যা গভীরভাবে স্কিন রিপেয়ার করে আর ফাইন লাইন কমায় বা দীর্ঘমেয়াদে Aging Sign কন্ট্রোলে কার্যকর সব বিষয় মিলিয়ে তিনটি ক্রিমই কার্যকর তবেঃ আলাদা স্তরে আর প্রয়োজন অনুযায়ী।সেই তিনটি ক্রিম কি সমান কাজ করে?
সোজা কথায় না !!!!! তিনটি ক্রিমই কিন্তু সমানভাবে কাজ করে কিন্তু তাদের কার্যপ্রণালী আর তাদের কার্যকারিতা কিছুটা ভিন্ন টাইপের যেমন >>>>>
Nivea Q10 Power Anti Wrinkle + Firming Night Cream | নিভিয়া কিউ 10 মূলতঃ প্রথম ধাপের বলিরেখা বা ব্রণ বা হাল হালকা Aging Sign কমাতে কাজ করে সাশ্রয়ী আর বেসিক কেয়ার হিসেবে। Neutrogena Rapid Wrinkle Repair Daily Face Moisturizer SPF 30 | নিউট্রোজেনা মূলতঃ রেটিনল + SPF থাকায় কেবল বলিরেখা কমায় না সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয় যেটা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত বেশি উপযুক্ত। Estee Lauder Advanced Night Repair | অ্যাস্তি লাউডার মূলতঃ প্রিমিয়াম সেরাম ক্রিম যা কেবল বলিরেখা নয় ড্যামেজড স্কিন রিপেয়ার আর ডিপ হাইড্রেশন বা দীর্ঘমেয়াদি Aging Sign কন্ট্রোলে অত্যন্ত বেশি কাজ করে।
সহজভাবে বললেঃ তিনটি প্রোডাক্টের মূল লক্ষ্য সমান বলিরেখা কমানো তবেঃ স্তরভেদে কাজের গভীরতা আর প্রোডাক্টের মান অনেকটাই আলাদা।
মুখের ব্রণ কমানোর ক্রিম ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ পরামর্শ জেনে নিন
মুখের ব্রণ কমানোর জন্য ক্রিম ব্যবহার করার সময় কিছু সাধারণ বিষয় মেনে চললে দ্রুত আর নিরাপদ ফল পাওয়া যায়। প্রথমতঃ ত্বক অনুযায়ী সঠিক ক্রিম বেছে নিতে হবে কারণঃ সব ক্রিম সব ধরনের ত্বকে কাজ করে না। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অয়েল ফ্রি আর নন কমেডোজেনিক ক্রিম সবচেয়ে ভালো আর শোষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজ যুক্ত ক্রিম কার্যকর। ক্রিম ব্যবহার করার আগে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করা জরুরি যাতে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ না হয়। দিনে অনেকবার অতিরিক্ত ক্রিম ব্যবহার না করে নির্দিষ্ট সময়ে অল্প পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত। দিনের বেলায় ব্রণ কমানোর ক্রিম ব্যবহার করলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা অপরিহার্য কারণঃ সূর্যের রশ্মি ত্বকের ক্ষতি বাড়াতে পারে পাশাপাশিঃ পর্যাপ্ত পানি পান করা আর স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস করা বা নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম ব্রণ কমানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।মুখের ব্রণ কমানোর ক্রিম ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ সতর্কতা জেনে নিন
মুখের ব্রণ কমাতে ক্রিম ব্যবহার করার সময় কিছু সতর্কতা অবশ্যই মেনে চলা উচিত। প্রথমতঃ সব রকমের ক্রিম সব ত্বকের জন্য উপযুক্ত নয় তাই ত্বক অনুযায়ী সঠিক ক্রিম বাছা জরুরি। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য সবসময় অয়েল ফ্রি আর নন কমেডোজেনিক ক্রিম ব্যবহার করা উচিত কারণঃ ভারী বা তেলযুক্ত ক্রিম ব্রণ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। নতুন কোনো ক্রিম ব্যবহার করার আগে হাতে বা ত্বকের অন্য কোনো ছোট অংশে টেস্ট করা ভালো যাতে অ্যালার্জি বা জ্বালা পোড়ার ঝুঁকি কমে। অতিরিক্ত ক্রিম ব্যবহার করলে ত্বক ভারী হয়ে যায় আর ছিদ্র বন্ধ হয়ে ব্রণ বেড়ে যেতে পারে তাই নির্দিষ্ট পরিমাণেই ব্যবহার করা উচিত। আরেকটি জরুরি বিষয় হলোঃ ব্রণ কমানোর ক্রিম সাধারণত রাতে ব্যবহার করা বেশি কার্যকর তবেঃ দিনের বেলায় ব্যবহার করলে অবশ্যই সানস্ক্রিন প্রয়োগ করতে হবে। সবচেয়ে জরুরি হলোঃ যদি ব্রণের অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা কিন্তু উচিত।মুখের ব্রণ কমানোর ক্ষেত্রে ক্রিমের পাশাপাশি অন্যান্ন যত্ন নেবার গাইডলাইন
মুখের ব্রণ কমাতে কেবল ক্রিম ব্যবহার করলেই যথেষ্ট নয় সঠিকভাবে স্কিনের কেয়ার রুটিন আর জীবনযাত্রার পরিবর্তন করা জরুরি। প্রতিদিন অন্তত দুইবার মাইল্ড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে আর তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ব্রণ বাড়িয়ে তুলতে পারে তাই নন কমেডোজেনিক সানস্ক্রিন ব্যবহার করা কিন্তু প্রয়োজন। হাত দিয়ে মুখে অযথা স্পর্শ না করা আর সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা খুবই জরুরি। ঝাল, তেল, চর্বি আর অতিরিক্ত চিনি কমিয়ে ফলমূল বা শাকসবজি খেলে ত্বকের অবস্থা ভালো থাকে পাশাপাশিঃ পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম কিন্তু মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে ত্বকের স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে তবেঃ দীর্ঘস্থায়ী ব্রণের ক্ষেত্রে কিন্তু অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অভিজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ করা কিন্তু সবচেয়ে উচিত হবে।
Tags
Health